
নিজস্ব প্রতিবেদক: পটুয়াখালী জেলার সাব জজ আদালত চত্বর থেকে অপহরণের পর মৃত্যুর মুখ থেকে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বাঁচিয়ে আনলেও সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হত্যার হুমকিতে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করে ৯ অক্টোবর ২০২৪, ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের ক্র্যাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এম এ খায়ের মোল্যা, পিতা-আব্দুর রব মোল্লা। তিনি বলেন, ৭২/২, নবীনপুর কুয়াকাটার রোজ ভ্যালী মোটেল এন্ড রিসোর্টের মালিক। পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট বৈসম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের সময় সুবিধাভোগী পটুয়াখালী জেলার লোহালিয়া নিবাসী কুখ্যাত সন্ত্রাসী মোঃ জসিম শিকদার ওরফে রানা পরিকল্পিত ভাবে আমার হোটেলটি ভাংচুর ও লুটপাট করে দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এসব বিষয় নিয়ে আইনি সহায়তার জন্য গত ১৮-৯-২৪ ইং তারিখ পটুয়াখালী সাব-জজ আদালতে যাই । বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী জসিম শিকদার রানা, মোঃ কবির শিকদার, মোঃ সাইদুর রহমান, মোঃ রনি, আলী হোসেন, মোঃ জসিম আকন, বশির আকন, নেছার আকন, সোহাগ ফরাজী, মানিক সুকানি, মোঃ ফারুক মির, মোঃ নেছার, মোঃ মিরন, মোঃ ফারুক, রিয়াজ ফকির, নিরাজ ছুকানি, মোঃ সাইদ ছুকানি, মোঃ রফিক আকন, খলিল মৃধা, কালাম মৃধাসহ আরো ২০/৩০ জন অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের সামনে এ ধরনের ঘটনায় আমি চিৎকার করলেও অস্ত্রের ভয়ে কেউ সামনে এগিয়ে আসেনি। তারা একটি সাদা রংয়ের টয়োটা কোম্পানীর প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-গ-২৩-৩০৩৮) এ করে পটুয়াখালী সদরের অদূরে লোহালিয়া গ্রামের নির্জন বিল এলাকায় নিয়ে যায় ।সেখানে একটি একতলা ঘরে চোখ বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করে। তাদের নির্মম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাঁচার আকুতি জানাতে থাকি। এক পর্যায়ে তারা আমার চোখের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ঠেকিয়ে ১০০/- টাকা সম মূল্যের ১২ টি সাদা নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প ও তিনটি সাদা কার্টিজ পেপারে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। একই সাথে আমার সাথে থাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক বিজয় নগর শাখার একটি চেক যাহার নম্বর সিডি-৫০০৭১৭৪ এ ৫ কোটি টাকা লিখে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং আমাকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় ফাসানোর জন্য অস্ত্রের মুখে পরোনের কাপড় খুলে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দিলেও পুনরায় হাত-পা ও চোখ বেধে ফেলে। এরপর আমাকে হত্যা করবে বলে তারা আলাপ করতে থাকে। কিন্তু বাইরে আমার হোটেলের ম্যানেজার থানায় জিডি করে আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সেক্টরে অভিযোগ দিলে তারা পৌরসভার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে আমাকে খুঁজতে শুরু করেন। এই সংবাদ অপহরণকারীরা পেয়ে যায়। তারা পরদিন ১৯ তারিখ সন্ধ্যায় আমাকে ব্যাপক মারধর ও অমানসিক শারিরীক নির্যাতন করে পটুয়াখালী সদরের নিকটে লোহালীয়া ব্রীজের নিচে ফেলে যায়। সেখানে থেকে জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসা দিয়ে সদর থানায় নিয়ে আসে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। এর মধ্যে পুলিশ বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা থেকে অপহরণের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে অপহরণে ব্যবহৃত জসিম শিকদার ওরফে রানার অপহরণে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও চালককে আটক করে। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। তবে পুলিশের সাথে যোগাযোগ বা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিতেও থানায় যেতে পারছি না । গত ১৯- ৯-২০২৪ ইং তারিখ অপহরণে মুক্তি পাওয়ার পর পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে গত ২২-০৯-২০২৪ ইং তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় মামলা রুজু করে। যাহা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন ও অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং উক্ত সন্ত্রাসীরা আরোও ২০/২৫টি মিথ্যা মামলা দিবে বলে হুমকি দেয় ।সে যাত্রায় আল্লাহ বাঁচিয়ে দিলেও পরবর্তী মামলা বা কোন আইনীপদক্ষেপ না নেয়ার জন্য সন্ত্রাসী জসিম শিকদার একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। কোন মামলা বা আইনী পদক্ষেপ নিলে অথবা রোজ ভ্যালী হোটেলে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুরো পরিবারসহ হত্যা করে কুয়াকাটার সমুদ্রে লাশ ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। তার হুমকিতে কুয়াকাটা যাওয়া দুরের কথা বাসা থেকে বের হতেও ভয় হচ্ছে। কারণ মোঃ জসিম শিকদার ওরফে রানা একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অপহরণ, গুম, খুন, দখল, চাঁদাবাজি, মারধরসহ নানা ধরনের মামলা ও অভিযোগ রয়েছে, আমার ম্যানেজার স্বাক্ষী রেজাউল করিম পটুয়াখালী সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন, যাহার নম্বর-৮৯৪, তাং-১৮/০৯/২৪ । এই অবস্থায় পরিবারসহ নিজের নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার জন্য বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।