ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পশ্চিমা বনাম রাশিয়ার যুদ্ধের দায়ভার বাঙালী নিতে প্রস্তুত নয়।

সমাজ, অর্থনীতি, বিশ্ব নিয়ে যারা মন্তব্য করে তাদের সকলের অবস্থান উচু-নিচু স্থানে থাকে। কারও জানার পরিধি বেশি আবার কারও কম। তবে সবারই একটি নির্দিস্ট এরিয়ার মানব সমাজের জীবন – যাপনের উপর নানাহ রকম তথ্য জানা থাকে। সেক্ষেত্রে সবারই তথ্য সমাজ থেকেই নেওয়া। তাই সবার মন্তব্যেরই গুরুত্ব বহন করে।
বিশ্বে পশ্চিমা বনাম রাশিয়া যুদ্ধ আসবে তা জেনে যেমন কোন পরিকল্পনা গ্রহন করা নাই, তেমনি দেশ তার শুধু অগ্রগতির জন্য কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল।
এখন বিশ্ব, দেশ সহ সমাজ বিশ্ব অর্থনীতির সাক্লোনের মধ্যে পড়ে পথহারা হয়েছে। তবে এই পথহারার ইতিহাস নতুন নয়। সব সময়ই মানবজাতি পথ খুজেও পেয়েছে। যার প্রমান আজকের ডিজিটাল বিশ্ব।
তবে সকল সময়েই বিশ্ব দুর্যোগের সময় মানুষকে কস্ট করতে হয়েছে। এবারও কস্ট করতে হবে না তার কোন পথ কেহ দেখাতে পারবে না। তবে কস্টের পরিমানকে কমিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেস্ট হতে হবে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুধু নয় বিশ্বের সকল দেশের ক্ষেত্রেই সরকারকে ব্যক্তির সহায়তায় এই দুর্যোগকে কাটিয়ে উঠার নেতৃত্ব দিতে হবে। তাই সরকাকেই সঠিক ও বাস্তব কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
আজ আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের পদ্মা সেতু, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, ফসলের ফলন বৃদ্ধি সহ সকল উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করব অথচ দেশ ও বিশ্ব সংকটের বাইরে থেকে দুধে -ভাতে থাকব তার সুযোগ ইতিহাসে নেই। তবে অযথা কোন ভোগান্তি জনগন মেনে নিতে চায় না । ব্যক্তি, সমাজ. সহ রাজনৈতিক দলকে অবশ্যই দেশে ও দেশের মানুষের কল্যানের পথে হাটতে হবে। সংকট কাটিয়ে উঠার পর বিলাসিতা যেমন ভোগ করা যাবে তেমনি দেশের জটিল বিষয়গুলির সমাধানের বিষয়ে লড়াই করা যাবে। এই সময় সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য প্রত্যেকের অবস্থান থেকেই ধৈর্য সহকারে কাজ করে যেতে হবে। সাইক্লোনের সময় যেমন নিরাপত স্থান খুজে পাওয়া কঠিন তেমনি আজকের সংকটের সময়েও নিরাপদ স্থান পাওয়া কঠিন। তবে সাইক্লোনের সময়টুকুতেই যেমন অপেক্ষা করা ছাড়া কোন পথ নেই তেমনি বিশ্বের আজকের সংকটের সময় অপেক্ষা করাটাই প্রধান কাজ।
ইতিহাসে সংকট ছিল, সংকট অতিক্রম হয়েছে, নতুন সংকট এসেছে। তবে জাতি হিসেবে যারা বিশৃংখল হয়েছে তাদের সংকট দীর্ঘায়িত হয়েছে।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সহ নানা প্রাকৃতিক ও রাষ্ট্রীয় সংকটে আমাদের বিশৃংখলা সহনিয় ছিল বলেই আজ পর্যন্ত আমরা আফগানিস্থান, ইরাক সহ ইউক্রেনের মত দীর্ঘ সময় যুদ্ধে লিপ্ত ছিলাম না। যুদ্ধ শুধু বাহিরের শক্তির সাথে নয়- নিজেদের মধ্যেও যুদ্ধ সংকটের পরও জাতিকে বিশৃংখল করে রাখে। আমরা বঙালী হিসেবে সেই সংকটের মধ্যে পড়ি নাই। এবারের সংকট পশ্চিমা আর রাশিয়ার মধ্যে থাকবে- আমরা এর জন্য প্রভাবিত হতে পারি – কিন্তু নিজেরা বিশৃংখল হয়ে পশ্চিমা ও রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ার চেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে যেতে পারি না।
আমাদের বাংলাদেশ আজ যেখান দাড়িয়ে আছে- সেখান মনুষে মানুষে সুবিধা ভোগের পার্থক্য হলেও আগের তুলনায় অনেকাংশে মানুষ ভালভাবে জীবন যাপন করছে। এই জীবন যাপনকে আমরা পশ্চিমাদের কুটকৌশলের কারনে আফগানিস্থান, ইরাক, ইউক্রেনের মানুষের মত নস্ট করতে পারি না। আমার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শতপ্রতিকুলতার পরও নিজেদের একতা ধরে রেখে দেশেকে স্বাধীন করেছি।পশ্চিমা আর রাশিয়ার তৈরি করা সংকটের সময়ও আমরা শত কস্টের মধ্যেও জাতি হিসেবে নিজেদের মধ্যে বিশৃংখলা থেকে বিরত থেকে নতুন প্রজন্মের জন্য সুখময় দেশ রেখে যেতে চাই। আমরা যুদ্ধ, বিশৃংখলা, অস্থিরতা নতুন প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে প্রত্যাশা করি না।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের মানুষের কস্টের কথা আমাদের অনেকেরেই মনে আছে। তবে সে কস্ট মনে পড়ে যেমন ব্যথিত হই তেমনি বাংলাদেশের আজকের অবস্থান দেখে তেমনি সুখি হই। সেদিনে আমাদের চোখের সামনে যারা জীবন দিয়ে দেশকে রক্ষা করেছে, না খেয়ে থেকেছে, বনে-জঙ্গলে, পানিতে-কাদায় দিনের পর দিন অতিবাহিত করে জীবন যাপন করেছে- তারপরও তারা দেশের পক্ষেই ছিল। আজও যার যার অবস্থানে কস্ট হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধের মত ত্যাগ স্বীকার করে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য শৃংখলা রক্ষা আমাদের করতে হবে। ইউক্রেনের মত আমরা নানাহ বিশৃংখলা করে সরকার ও জনগন মিলে নিজের দেশের মানুষের জন্য কস্টের সাগর সৃষ্টি করতে পারি না । তাই সকলে দেশ ও দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থকে সামনে রেখে এবং আগামী দিনের বা সংকটের পরের দিনগুলি ভালভাবে কাটানোর প্রত্যাশায় কোন বিশৃংখলার সৃস্টি করা থেকে বিরত থাকব।
আমাদের দেশের সরকার ও বিরোধি রাজনীতি আজকের এই সংকটের সময় সমাধান করার প্রয়াস চালানোর সুযোগ আছে কিনা তা হয়তো আমার ব্যাখ্যায় আসে নাই- তবে সংকটের সময় রাজনৈতিক বিশৃংখলা যে একেবারে কাম্য নয় – সে সম্পর্কে কারও দ্বিমত থাকতে পারে না। সংকট কেটে উঠুক- আমরা আমাদের মানুষে মানুষে প্রভেদ যেমন দুর করার চেস্টা করব তেমনি দেশের সকল মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করব। শুধু সংকটের সময়টুকু আমাদেরকে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে বসবাস করতে হবে।