
ইতিমধ্যে অনেক জল্পনা কল্পনার পর এইচএসসি’20 সালের চুড়ান্ত ফলাফল সরকার ঘোষনা করেছে। শিক্ষার্থীদের প্রায় বছর খানেক সময় শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে গেলেও জেএসসি ও এসএসসি এর ফলাফলের ভিত্তিতে এবারের এইচএসসি এর ফল হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা খুশি। করোনার কারনে যে সময়টুকু অপব্যয় হয়েছে তা ফল হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা ভুলে গেছে।
এবার শিক্ষার্থীদেরকে ফেস করতে হবে ভর্তি যুদ্ধ। এবারের ফলাফলে সকল শিক্ষার্থী পাশ করেছে। যার ফলে প্রায় 14 লক্ষের মত শিক্ষার্থী এবার উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সনদ পেয়েছে। যা খুশির খবর। কিন্তু বাধ সেধেছে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা সহ টেকনিক্যাল শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে ভর্তি নিয়ে।নানাহ বিশ্লেষনে দেখা গেছে সরকারি ও বেসরকারি সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেশে মোট 11 লক্ষ শিক্ষার্থীর জন্যে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তাতে এমনিতে 3 লক্ষ শিক্ষার্থীকে উ্চ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে হবে। যার ফলে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থী ও তার পরিবার মাহসঙ্কটে আছে।
উচ্চ শিক্ষা সহ নানা টেকনিক্যাল সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখে শিক্ষার্থীদের পিলে চুমকে গেছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে 700 টাকা ফি আবেদনের সাথে প্রদান করতে হবে। এই আবেদন করতে শিক্ষার্থীর আনসুঙ্গিক খরচ সহ মোট প্রায় হাজার খানেক টাকা শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে খরচ হবে। চুড়ান্তভাবে ভর্তির সুযোগ পেতে কতটাকা খরচ হবে তার হিসাব করা কঠিন। এভাবে একজন শিক্ষার্থী জানে না তার কোথায় শিক্ষার সুযোগ হবে। তাই তাকে অগনিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে। যা একজন শিক্ষার্থীর পরিবারের বহন করা প্রকৃত পক্ষেই অসম্ভব।
এবার যে সব প্রতিষ্ঠান ভর্তির আবেদনের জন্য 700/- টাকা বা এর বেশি টাকা আবেদনের সাথে গ্রহন করছে- তাদের বিষয়টি দেখা যাক। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে 14 লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে কম করে হলেও যদি এক লক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করে তবে তাদের ফান্ডে জমা হবে 7 কোটি টাকা। ভর্তির জন্য প্রার্থী যখন এত বিশাল পরিমান ভর্তির আবেদনের খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 7 কোটি টাকা আয়ের ব্যবস্থা করে ফেলেছে। তারপরও এসব প্রতিষ্ঠানে সর্ব্বোচ্চ 50 জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। যেন আলাউদ্দিনের চেরাগের মত ফু দিয়ে 7 কোটি টাকা আয় করা হবে। বিষয়টি আর বিশ্লেষন না করে এসব বিষয় যারা দেখভাল করেন- তারা বিষয়টিকে কিভাবে অনুমোদন করেছে- দেশের মানুষের সেটাই প্রশ্ন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মানুষের পাশে থেকে নানাহ মানুষের নানাহ কষ্টের বিষয় রপ্ত করেছে। নানাহ বিষয় সমাধানের চেস্টাও করেছে। কোন কোন বিষয়ে সফলও হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের একটি উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে বার বার অনুরোধ করে যাচ্ছে। কিন্তু যাদের অনুরোধ করা হচ্ছে তারা শিক্ষার চেয়ে অর্থের দিকে বেশি হেলে পাড়ায় মাননীয় রাষ্ট্রপতির উক্ত উদ্যোগ এখনো আলোর মুখ দেখে নাই।
দেশের সাধারন মানুষ অনেক কষ্টের কথাই বলে থাকে – কিন্তু সংশ্লিষ্টগন কতখানি দেশের মানুষের অনুকুলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে – তা এই ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের ফি নিয়ে বিশ্লেষন করলে বুঝা যায়।
তবে এসকল বিষয় যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে তখনই বিধি বাম। তিনি দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে এসব ক্ষেত্রে অনেক ভাল সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে- যা সাধারন মানুষের অনুকুলে এসেছে।এরকম অসংখ্য উদাহরন রয়েছে।
তাই দেশের মানুষ মনে করছে- ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের ফি নিয়ে যে ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিকগন আলাউদ্দিনের চেরাগ ফু দিয়ে রাতারাত ধনি হতে চাচ্ছে তা বন্ধ হয়ে যাবে- যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টির দিকে নজর দেন।