ঢাকা, রবিবার, ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পেটের প্রদাহজনিত রোগকে অবহেলা নয়, এই রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনা জরুরি: মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পেটের প্রদাহজনিত রোগকে ( inflammatory bowel diseases-IBD ) অবহেলা নয়, এই রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনা জরুরি। এই রোগে ওজন কমে যায়, খাবারে  অনিহা দেখা দেয়,  পেটে ব্যাথা হয়, কখনো পায়খানার সাথে রক্ত যায়, কখনো চর্ম রোগ দেখা দেয় ও চোখের সমস্যা হয়। পেটের প্রদাহজনিত রোগ বা আইবিডি সম্পর্কে দুটো বিষয় আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রোনস ডিজিস সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে হবে। দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এই রোগে ভুগছেন। পরিপাকতন্ত্রের এই রোগের মাধ্যমে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। আইবিডি বা পেটের প্রদাহজনিত এই রোগ নিরাময়যোগ্য না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং আগেভাগে রোগটি চিহ্নিত হলে ক্যান্সার থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। আজ ১৯ মে ২০২১ইং তারিখে বিশ্ব আইবিডি দিবস ২০২১ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জুম মিটিং এ অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত জাতীয় অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান, জাতীয় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসানসহ বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন। সভাপতিত্ব করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি  অধ্যাপক ডা. মোঃ আনওয়ারুল কবীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের শিক্ষক ও এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের  মহাসচিব অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ।
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা মাননীয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছিল বলেই মহামারীর এই সময়ে অনেক অসম্ভব কাজ সহজেই সম্পন্ন করা যাচ্ছে। ঘরে বসে বা অফিসে অবস্থান করেই গুরুত্বপূর্ণ সভা, সেমিনারে অংশগ্রহণ করা যাচ্ছে। টেলিমেডিসিনের মতো চিকিৎসাসেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। মাননীয় উপাচার্য আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রোগের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। করোনার এই মহামারীর সময়ে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা অত্যন্ত দক্ষ এবং তাদের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এছাড়া মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে নবনিযুক্ত জাতীয় অধ্যাপক ডায়াবেটিক এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান ও বাংলাদেশ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসানকে অভিনন্দন জানান ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ উপস্থাপিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ ‘রিসেন্ট আপডেটস ইন ক্রোন্স ডিজিজ ম্যানেজমেন্ট ( Recent updates in Crohn’s disease management )’ এ বলা হয়, ক্রোন্স ডিজিজ এক ধরণের প্রদাহজনিত পেটের রোগ। মুখ থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত যে কোনো স্থানে এই রোগ হতে পারে। পেটে ব্যাথা, পাতলা পায়খানা, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। প্যাশ্চাতে এই রোগ বেশী হলেও বাংলাদেশে এই রোগ এখন আগের থেকে বেশী নির্ণীত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে প্রতি বৃস্পতিবার আইবিডি ক্লিনিকে এই রোগের রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ে চিকিৎসা করলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এদিকে আজ বুধবার মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ একটি বেসরকারী টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে হতাশা কেটে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যকরী পদক্ষেপের কারণে অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে। ইতোমধ্যে চীন থেকে ভ্যাকসিন এসেছে। শীঘ্রই  মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ও বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন আসবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা রয়েছে তা আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে যারা কোভিড-১৯ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন তাদের অধিকাংশেরই দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান করা সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বাকীদের যাতে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান করা যায় সেক্ষেত্রেও নানামুখী তৎপরতা চলছে। আশাকরি, তাদেরও দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ মহোদয় আজ বুধবার ১৯ মে তাঁর কার্যালয়ে প্রশাসনিক মিটিং এ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া মাননীয় উপাচার্র্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাউন্ড দেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে আজ মঙ্গলবার ১৯ মে ২০২১ইং তারিখে চলমান কঠোর লকডাউনের মাঝেও মোট ৩৬৭ জন কোভিড ১৯ এর দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন। গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫৪ হাজার ৫ শত ৬৪ জন এবং আজ ১৯ মে ২০২১ইং পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৪১ হাজার ৮ শত জন। বেতার ভবনের পিসিআর ল্যাবে আজ ১৯ মে  ২০২১ইং পর্যন্ত পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪২ হাজার ১ শত ৪১ জনের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়েছে। বেতার ভবনের ফিভার ক্লিনিকে আজ ১৯ মে  ২০২১ইং পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৮ শত ৯ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। অন্যদিকে করোনা ইউনিটে আজ মঙ্গলবার ১৯ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত ৮ হাজার ৭ শত ৫ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৮ শত ৯৩ জন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৪ হাজার ১ শত ৬৯ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৬০ জন রোগী এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ৪ জন রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪ জন। ছবি: সংগৃহীত। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার। সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিডিয়া সেল।