মোঃ মামুন: গত ২৪-১০-২৪ ইং তারিখে ইনিস্টিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ প্রংগনে অবৈধভাবে আইইবির সদর দপ্তরের ঢাকা কেন্দ্রের কমিটি গঠন বাতিল প্রসংগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মিয়া মোহাম্মদ কাইউম, সাধারণ সম্পাদক (সাবেক) আইইবি। তিনি বলেন, ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ স্বৈরশাসন ও অপশাসনের ফলে প্রত্যেকটি সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান সমূহ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ইনিস্টিউশন অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি), দেশের সকল প্রকৌশলীদের জাতীয় একটি অরাজনৈতিক পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রকৌশলীদের পেশাগত মান ও দক্ষতা উন্নয়নে ইন্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ এবং প্রফেশনাল ইন্জিনিয়ার্স রেজিস্ট্রেশন বোর্ড কার্যরত। দেশের সকল অবকাঠামো, যেমন-ভবন, ব্রীজ, রাস্তাঘাট, রেল, সিভিল এভিয়েশন, বিদ্যুত, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম,শিল্প-কলকারখানা, তথ্য প্রযুক্তি,জলবায়ু পরিবর্তনসহ সকল ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রকৌশলীদের পেশার মান উন্নয়নের উপর দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ণ নির্ভরশীল। কিন্তু দলীয় লেজুরবৃত্তির কারনে বংগবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নামে আইইবির পদ ব্যবহার করে দুর্নীতি,তদবিরবাজী,চাঁদাবাজী,দখলবাজী, টেন্ডারবাজীর মাধ্যমে গত ১৬ বছরে আইইবিকে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে। দেশের আপামর ছাত্র-জনতা,বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল শক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে দেশবাসী স্বৈরশাসক হাসিনা ও তার দোষরদের দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রকৌলীদের একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান অফ ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) অবৈধভাবে দখলকারী বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা বর্তমানে পলায়নরত।ফলে আইইবি নেতৃত্ব শূণ্য অবস্থায় আছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে।এই অচলবস্থা নিরসনে আমরা আইইবির গঠনতন্ত্রের ৫২ (বি) অনুযায়ী ২৬০ জন সদস্যগনের স্বাক্ষর গ্রহন করে রিকিইজিশন সভা আহবানের জন্য প্রেসিডেন্ট আইইবি কে অনুরোধ করা হয়।আমরা কোন প্রতুত্তর পাই নাই।ইতিমধ্যে AEB এর তিনজন সদস্য AEB এর প্যাড ব্যবহার করে ২৩ অক্টোবর তারিখে কাল বেলা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে ২৪ অক্টোবর তারিখে একটি EOGM(Extra Ordinary General Meeting) আইইবি প্রাংগনে আহবান করে এবং অবৈধভাবে চর দখলের মত প্রেসিডেন্ট,সাধারন সম্পাদক সহ ১০ সদস্য বিশিষ্ট আইইবির সদর দপ্তরের এবং চার সদস্যের আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের কমিটি গঠন করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। নিম্নোক্ত কারনে ফ্যাসিবাদী কায়দায় করা কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ : ১। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর ৫২ উপ- বিধি অনুযায়ী কেবল প্রেসিডেন্ট আইইবি EOGM বা Requisition meeting ডাকতে পারবে অন্য কেহ নয়। তাছাড়া EOGM এর সভাপতি নির্বাচনে Bye laws এর চ্যাপ্টার ৬ এর ৩৯ ধারা অনুসরন করা হয় নাই। ২। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর ৫১ উপ- বিধি অনুযায়ী কমপক্ষে ২১ দিন সকল সদস্য এবং সহযোগী সদস্যগনে সভার নোটিশ পাঠাতে হবে। ৩। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর৫২ উপ- বিধি অনুযায়ী EOGM এ কেবল একটি এজেন্ডা থাকবে। কিন্ত EOGM সভার নোটিশে, এমনকি সভায় ব্যবহৃত ব্যানারেও কোন এজেন্ডা ছিল না যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। তাছাড়া ব্যানারে আইইবির কোন লোগো ছিল না। ৪। আইইবি গঠনতন্ত্রের চ্যাপ্টার ৬ এর৫২ উপ-বিধি অনুযায়ী EOGM এ কর্পোরেট সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। কিন্তু ভোট ব্যতীত বক্তব্য প্রদানকৃত সদস্যদের মতামতের তোয়াক্কা না করে হীন স্বার্থ চরিতার্থের জন্য ফ্যাসিবাদী কায়দায় অবৈধভাবে মনগড়া কমিটি প্রকাশ করা হয়। ৫। Bye laws এর চ্যাপ্টার ৫ এর ৩০ ধারার ব্যতয় ঘটিয়ে Central Election Committee ব্যতীত অবৈধভাবে চর দখলের মত প্রেসিডেন্ট,সাধারন সম্পাদক সহ ১০ সদস্য বিশিষ্ট আইইবির সদর দপ্তরের এবং চার সদস্যের আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের কমিটি গঠন করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে যারা সকলেই AEB এর সদস্য। বিগত ১৬ বৎসরের অভিজ্ঞতায় সাধারন প্রকৌশলী সমাজ আইইবিকে দলীয় লেজুরবৃত্তের উর্ধ্বে পেশাজীবি বান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। পূর্বের ন্যায় রাজনৈতিক দল এবং আইইবির পদ ব্যবহার করে সরকারী বিভিন্ন বিভাগে পোস্টিং/পদন্নতির অনৈতিক তদবীর,চাঁদাবাজী,টেন্ডারবাজী সাধারন প্রকৌশলী সমাজ দেখতে চায় না। প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এখানে উল্লেখ্য যে,যাকে অবৈধভাবে স্বঘোষিত আইইবির প্রেসিডেন্ট ঘোষনা করা হয়েছে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় AEB এর প্রেসিডেন্ট । অর্থাৎ তিনি এখন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদধারী।তিনি কিভাবে প্রকৌশল পেশার উন্নয়ন ঘটাবেন। এমতবস্থায়,আমরা আইইবতে অবৈধভাবে গঠিত কমিটি বাতিল করার জন্য সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে আহবান করছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সকল প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার কাজী ফজলুল করিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউকসু ও প্রেসিডেন্ট এক্স ডেসিডি, বুয়েট।