ঢাকা, রবিবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শোকজ-বহিষ্কার নিয়ে বিএনপির ‘লুকোচুরি’, বলছে বিজ্ঞপ্তি ভুয়া

দেশের একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিটিং করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনকে শোকজ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে শোকজ করা হয়েছে— এমন একটি চিঠি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এই নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, এই মর্মে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, কোনো স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে। ফেসবুকে পোষ্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এতে আরও বলা হয়, প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি আমার স্বাক্ষরে বিএনপির দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট ও ভুয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রচারিত ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এরপর শতাধিক নেতাকর্মীকে শোকজ ও বহিষ্কার করে বিএনপি।

প্রথম দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের শোকজ ও বহিষ্কারের ঘটনাগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়। কিন্তু শেষ দিকে এসব নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে লুকোচুরি করা হয়।

ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ১ সপ্তাহে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয়। কারও-কারও পদ স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু এসব শোকজের নোটিশ বিএনপির দপ্তর কিংবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি।

সর্বশেষ গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয়। এই বিষয়ে বিএনপির দপ্তর থেকে কোনও প্রেস বিজ্ঞপ্তি কিংবা দলের ফেসবুক পেজে জানানো হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ছড়ানোর সুযোগ দিচ্ছি আমরা নিজেরাই। কারণ, কিছু-কিছু ক্ষেত্রে আমরা এসব নিয়ে প্রকাশ্যে বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছি। আবার কিছু-কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখছি। যার ফলে একটি মহল বাণিজ্য করার সুযোগ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, সবার ক্ষেত্রে এক নিয়ম হলে কেউ গুজব ছড়ানোর সুযোগ পেতো না। এখন কাউকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শোকজ করা হচ্ছে। আবার কাউকে গোপনে শোকজ করা হচ্ছে। যা নিয়ে দলের মধ্যে অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আর এই সুযোগে কেউ-কেউ গুজব ছাড়াচ্ছে।