ঢাকা, সোমবার, ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে ৩৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেন যশোর জেলা আ.লীগ সভাপতি!

যশোর সদরের হামিদপুর পশ্চিমপাড়ায় আসাদুজ্জামানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন। এই ঘটনায় কোনো সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার ছেলে সামির ইসলাম পিয়াসের সম্পৃক্ততার প্রমাণ করতে পারলে ৩৫ লাখ টাকার পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা দেন।

একইসঙ্গে জমির মালিক দাবি করা, আসাদুজ্জামান বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারলে আরও ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন।

জানা যায়, ২৭ জুন দুপুরে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে যশোর সদরের হামিদপুর পশ্চিমপাড়ায় আসাদুজ্জামানের বাড়ি এস্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার ছেলে সামির ইসলাম পিয়াসের বিরুদ্ধে। এ সময় সন্ত্রাসীরা সেখানে লুটপাট চালায় বলেও দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবার।

এ ঘটনায় একদিন পর ২৮ জুন ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনার ছয়দিন পার হলেও অভিযোগটি পুলিশ মামলা হিসাবে নেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে দুই পক্ষ।

এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, মামলা নথিভুক্ত করার নানা প্রক্রিয়া রয়েছে। বিষয় তদন্ত চলছে।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফার সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম বলেন, আসাদুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা অবৈধভাবে দখল করা জমির বাড়িঘর নিজেরাই ভাঙচুর করেছেন। তারা লুটপাটের নাটক সাজিয়ে আমাকে জড়াচ্ছে। আমি ও আমার ছেলের এই ঘটনায় সম্পৃক্ততা নেই। ওই জমির মালিক আমার বেয়াই নুরুল ইসলাম। প্রায় ২৭ বছর ধরে নুরুল ইসলামের জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখে আসাদুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা। তারা নিজেরাই এস্কেভেটর এনে বাড়ি ভাঙচুর করে নানা কল্পকাহিনী সাজিয়ে আমার ও ছেলে পিয়াসের নাম জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে।

তিনি বলেন, ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা দূরের কথা, শহরের চৌরাস্তা এলাকা পার হয়েছেন এমন প্রমাণ যদি কোনো সাংবাদিক দিতে পারেন তাকে ২০ লাখ পুরস্কার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ছেলে সামির ইসলাম পিয়াস ওইদিন ঘটনাস্থল এলাকায় ছিলেন এমন প্রমাণ করতে পারলে আরও ১৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা দেন শহিদুল ইসলাম মিলন।

শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, আমি ওই জমির কেউ নই। আমার বেয়াই নূরুল ইসলাম ও নুর মোহাম্মদ ওই জমির প্রকৃত মালিক। তারা খাজনা দিয়ে আসছেন। আর আসাদুজ্জামান ভূমিদস্যু। বৃদ্ধ নূরুল ইসলাম মাস্টার ও নুর মোহাম্মদের পরিবারের লোকজনকে হেনস্তা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন জবর দখলে আছে। ঘটনার ব্যাপারে আমাকে ও আমার ছেলের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় এমনকি থানা পর্যন্ত অভিযোগ করা হয়েছে। আসাদুজ্জামান পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এটা ভুয়া। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য কিংবা সন্তান জুড়ে দিয়ে চরম মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হচ্ছে। সম্প্রতি যশোরের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ওই সম্পত্তি থেকে আসাদুজ্জামান গংকে উচ্ছেদ করে নূরুল ইসলাম ও নুর মোহাম্মদকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে বিবৃতিও দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এএসএম হুমায়ূন কবীর কবু ও গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মুজিবুদ্দৌলাহ সরদার কনক, উপদপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান প্রমুখ।