বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম. এ. আলীম সরকার এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিবছর সরকার (যে দলের অথবা অবস্থানের সরকারই হোক), বার্ষিক বাজেট এবং পূর্ববর্তী বছরের জাতীয় আয়-ব্যয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে। এই নিয়ে বাজেট প্রকাশের কিছু আগে এবং পরে নানারকম অনুকূল ও প্রতিকূল মত প্রকাশ করে থাকে। বাংলাদেশের সরকার মূলত দেশের ধনিক-বণিকদের পক্ষে কাজ করে থাকে। তাতে শ্রমিক, কৃষক, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও বৃহত্তর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কথা উল্লেখ থাকে এবং তাদের জন্য কাজ করার প্রয়োজনে কিছু অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। আসলে শ্রমিক, কৃষক, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য অর্থ বরাদ্দ কম থাকে। বাংলাদেশে গত ৫৩ বছর ধরে বেসামরিক ও সামরিক যেসব সরকার ক্ষমতায় থেকেছে তারা সবাই মূলত ধনিক-বণিকদের স্বার্থকে স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ন্যায়-অন্যায়ের বিবেচনায় অল্পই বিবেচিত হয়েছে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটও সেই ধারাতে প্রণীত হয়েছে। বাজেট এখনো জাতীয় সংসদে পাশ করা হয়নি, কেবল পেশ করা হয়েছে। আমাদের আহ্বান শ্রমিক, কৃষক, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের স্বার্থে বরাদ্দ বাড়ানো হোক এবং সর্বজনীন কল্যাণে সবকিছু নতুন করে সংশোধন করা হোক। যাতে দরিদ্র মানুষেরা সম্মানজনকভাবে জীবনযাপনের পরিবেশ উন্নত হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে গোটা বাজেটে বিষয়গুলো পুনর্গঠন করা হোক। বিদেশে অর্থপাচার ও আনুষঙ্গিক ব্যাপারগুলো বন্ধ করার কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বিবেচনা করে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হোক। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে অধিকতর অর্থ বরাদ্দ করা হোক। সরকার যাতে দেশের ভিতর থেকে এবং বাহির থেকে ঋণ নেওয়া বন্ধ করতে পারে তার জন্য ক্রমিকগতিতে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হোক। পর্যায়ক্রমে দুর্নীতি দূর করতে হবে। দুর্নীতি ও অনাচার বন্ধ করা হোক। অল্প সময়ে একেবারেই সব সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এর জন্য স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে যেরকম হওয়া উচিত, তাহা প্রকৃতপক্ষে জনগণের সরকার দ্বারাই সম্ভব হতে পারে। সেজন্যে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ করতে হবে। যে রাজনীতি চলছে তাকেই বহাল রাখার জন্য এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এটা উচ্চ পর্যায়ের শতকরা দশ ভাগের লোকের জন্য করা হয়েছে। নিম্ন পর্যায়ের শতকরা নব্বই ভাগের লোকের জন্য ভিন্নতর বাজেট দরকার। সেদিকে অগ্রসর হতে হলে উন্নততর রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি দরকার। জনসাধারণকে ব্যাপারগুলো বুঝতে হবে। জনসাধারণকে রাজনীতি বিষয়ে এবং নিজেদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে।