চক্ষু মেলেই যাকে আমি প্রথম দেখেছি,
সবচাইতে আপন আমি তাকেই জেনেছি।
আমায় দেখে প্রথম যে জন মিস্টি হেসেছে,
তাঁর সুখেই আমার সুখ এ মন জেনেছে।
হাজার কষ্ট তুচ্ছ জ্ঞানে গর্ভে রেখেছে,
রক্তে-মাংসে তিলে তিলে আমায় গড়েছে।
বিষ-বেদনা সয়ে সয়ে পাথর সেজেছে,
আমার জন্যে নিজেরই সুখ বলি দিয়েছে।
অ-আ-ক-খ যে আমারে শিক্ষা দিয়েছে,
জ্ঞানের চক্ষু সে-ই আমার প্রথম খুলেছে।
যার ভাষাতে আমার মুখে প্রথম এল বুলি,
তাঁকে ভুলে কেমন করে একলা পথে চলি ?
শ্রদ্ধা যাবে উর্ধ্বমূখী,স্নেহ নিম্নগামী,
শিক্ষা দিল ‘মনুষ্য প্রেম’ সবচাইতে দামী।
রোগে-শোকে পাশে রয় জেগে রাত্রিভর,
তাঁকে ছাড়া শূন্য লাগে জনবহুল ঘর।
কেমন করে শোধিব তাঁর রক্তমাখা ঋণ,
মাকে,প্রভু,ভালো রেখো সকল নিশি-দিন।
বড় হয়ে ধীরে ধীরে যাচ্ছি দূরে সরে,
তোমার কাছে ঋণখেলাপি সারা জীবন ধরে।
নাড়ী ছিঁড়ে, শরীর ফুঁড়ে যেদিন এলাম ভবে,
সেদিন কি আর ভেবেছিলাম এমন বিচ্ছেদ হবে।
মাগো তোমায় মনে পড়ে সকাল-সন্ধ্যা খু-উ-ব,
তোমার শাসন তোমার বারণ দেয় যে মনে ডুব।
ত্রিভূনে কোথায় পাবো এমন মধুর সুখ,
সব ভুলে যাই দেখলে তোমার হাসিমাখা মুখ।
তাইতো আমি একটি ক্ষণও তোমায় ভুলি না,
তুমি আমার জন্মদাত্রী জনমদুঃখী মা।