অনলাইন থেকে পণ্য কেনার মোহ রয়েছে অনেকেরই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘাটাঘাটি করার সময় কোনো পণ্য সামনে এলেই তাতে বুঁদ হন অনেকে। বিশেষ করে অল্প বয়সীদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
অনলাইন থেকে পণ্য কেনার এ মোহ কাটাতে চেষ্টা করেও অনেকে পেরে ওঠেন না। তাদের জন্য এ মোহ কাটানোর টোটকা দিয়েছেন ভারতীয় মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেবশ্রী মিত্র নামে এক নারী লিখেছেন, করোনা মহামারির সময় থেকেই অনলাইনে শাড়ি ও বই কেনার ঝোঁক তৈরি হয়। চেষ্টা করেও নিজেকে সামলাতে পারছি না। কোনো জিনিস পছন্দ হলে সেটা তখনই অর্ডার করতে না পারলে মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে। এটাও কি এক রকম নেশা?
অহেতুক অর্থ বা সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে বুঝেও নিজের ইচ্ছায় লাগাম পরাতে না পারার মতো সমস্যা নতুন নয়। খুঁজলে আমাদের আশপাশেই এমন উদাহরণ মিলবে। কিন্তু এই অভ্যাসকে ব্যক্তিগত ভাবে ‘নেশা’ বলে দাগিয়ে দিতে নারাজ মনোবিদ অনুত্তমা।
তার কথায়, কিছু কিনতে ইচ্ছা যেমন হচ্ছে, আমার বিশ্বাস সেগুলো কেনার পরেও দেবশ্রীর অস্বস্তি হচ্ছে। না হলে মনে এমন প্রশ্ন বা চিন্তা কোনওটিই আসত না। সুতরাং অস্বস্তিরও একটা তারতম্য আছে। পছন্দের জিনিস কিনতে না পারার অস্বস্তি এবং কিনে ফেলার পর অর্থ বা সময় নষ্ট করার অস্বস্তি। যে কোনও পছন্দের বিষয়, নিজের কাছে পেতে একটা তাগিদ তো কাজ করবেই। এ ক্ষেত্রে ভেবে দেখার বিষয় হল কোনটি প্রয়োজন আর কোনটি শুধুমাত্র চাওয়া। কারণ প্রয়োজন আর চাওয়া, দু’টি তো এক রকম হতে পারে না।
তিনি বলেন, ধরা যাক জল, যা আমাদের প্রয়োজন। কিন্তু ঠান্ডা নরম পানীয় আমাদের প্রয়োজন হতে পারে না। কিন্তু ভালোলাগার কোনো কিছুই আমরা জীবনে কিনব না, তা নয়। প্রত্যেক মাসেই এমন কিছু নির্ধারিত খরচ সবারই থাকে। কিন্তু তা বাদে কিছুটা অর্থ মাসের প্রথমেই সরিয়ে রাখা যেতে পারে পছন্দের জিনিসগুলো কেনার জন্য।
অনুত্তমা বলেন, হতে পারে পরের ঠিক ওই জিনিসটি পাওয়া গেল না। কিন্তু ওই প্রলোভনে পা দেওয়া যাবে না। হতেই পারে পরের মাসে ওই জিনিসটির থেকেও ভালো আরও অনেক জিনিস আপনি পেয়ে গেলেন। তাই কোনো মাসে পছন্দের জিনিস কেনার নির্ধারিত অর্থ শেষ হয়ে গেলেও পছন্দের জিনিসটি সে মাসেই কিনব না, নিজের সঙ্গে নিজের এই অঙ্গীকার থাকা জরুরি।