
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আগামী সপ্তাহে মধ্যে বহুল প্রতিক্ষিত বৈঠকে বসছেন। তারা দুজনই এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনের মাঝে আলাদাভাবে কথা বলবেন তারা। এর মাধ্যমে ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট । শুনা যাচ্ছে এ দুই বিশ্বনেতার মধ্যে প্রধান আলোচ্য বিষয় থাকবে তাইওয়ান ইস্যু।
শুক্রবার এমন এক তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিশ্বের অন্যতম দুই বৃহৎ ও পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রেসিডেন্ট এমন সময় বৈঠকে বসছেন যখন দেশ দু‘টির মধ্যে থাকা সম্পর্কের তীক্ততা বেড়েছে ঠিক সে সময়। স্বশাসিত দ্বীপ রাষ্ট তাইওয়ানকে চীন নিজেদের অংশ দাবি করার কারণে এবং এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করায় যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক শীতল থেকে আরও শীতল হয়েছে বলে জানা গেছে।
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে । যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আমরা তাইওয়ান নিয়ে আলোচনা করব…আমি তার সঙ্গে যা করতে চাই তা হলো যখন কথা বলব তখন উপস্থাপন করব…আমাদের উভয়ের রেড লাইন কি।’
এভাবে তারা বুঝতে পারবে ‘তারা দ্বন্দ্বে জড়িত আছে নাকি নেই, কিভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় এবং কিভাবে এ নিয়ে কাজ করা যায় তা নিয়ে।’ তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি আছে সেখানে বড় ধরনের কোনো ছাড় দিতে নারাজ ।
এদিকে চীন-তাইওয়ানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে বাইডেন একাধিকবার বলে এসেছেন যদি চীন তাইওয়ানে হামলা করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে। জো বাইডেন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
বাইডেন তাইওয়ান নিয়ে এমন হুমকি দিলে ও পেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজ “যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ” করার বিষয়টি বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- শি-জো বাইডেনের মধ্যে তাইওয়ান নিয়ে কি আলোচনা হবে সে বিষয়ে জানানো সকলকে জানানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন -তাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাইওয়ানকে বোঝানো ”যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় তাইওয়ান ‘নিরাপদ ও স্বস্তিতে আছে।’
অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-তারা চায় যুক্তরাষ্ট-চীনের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি আছে সেগুলো অবসান হোক।
গত মাসে কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান- চীনের সঙ্গে তাইওয়ানকে একত্রিকরণ করতে যদি শক্তি প্রয়োগ করতে হয় তা তারা করবেন।
তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ দাবি করে উত্তেজনা বৃদ্ধি করার কারণে চীনের কম্পিউটার চিপ প্রযুক্তির অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যার কারণে রপ্তানি নির্ভর চীনের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফোন ও বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি ও বিক্রি করা থেকে সবকিছু করে থাকে এশিয়ান জায়ান্ট রাষ্ট্র চীন।
সূত্র: বিবিসি