ঢাকা, রবিবার, ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা 1981 সালের 17 মে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা 1981 সালে 17 মে, দীর্ঘ নির্বাসন পরে দেশে ফিরে এসেছিলেন।

“আমি বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকতে এসেছি। আমি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। আমি আওয়ামী লীগের নেতা হতে আসিনি। আমি আপনার বোন হিসাবে, আপনার মেয়ে হিসাবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে আপনার পাশে থাকতে চাই, ”তিনি এদিন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এক বিশাল জনসভাতে এ কথা বলেন।

দেশে ফিরে শেখ হাসিনার এটাই প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য।

দিবসটি উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ (আ.লীগ) এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করেছে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা জারি করেছেন।

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে, নব্বইয়ের দশকে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র জয় লাভ করে ”।

প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ বলেন, “তার নেতৃত্বে  1996 সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগ (আ.লীগ) সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল এবং সরকার গঠন করেছিল।”

রাষ্ট্রপতি বলেন- “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪-জোট ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এবং সফলভাবে সরকার পরিচালিত করছে”।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সমস্যা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও শক্ত নেতৃত্ব এবং জনমুখী কর্মকাণ্ডের কারণে দেশটি এগিয়ে চলছে।

দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু -১ কে মাইলফলক হিসাবে উদ্বোধনের বর্ণনা দিয়ে হামিদ বলেন, “শেখ হাসিনা দেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য‘ ভিশন ২০২২ ’এবং‘ ভিশন ২০৪১  কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ”

তিনি বলেন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন এবং বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘায়ু, সমৃদ্ধি এবং তার সরকারের ধারাবাহিক সাফল্য কামনা করেছেন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরের বাইরে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিল। তারা দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে এসেছিল এবং ফার্মগেট পয়েন্ট থেকে নগরীর কুর্মিটোলা পর্যন্ত পুরো পথ জুড়ে ছিল আনন্দিত ভিড়।

এর আগে ১৯৮১ সালে ১৪-১6 February ফেব্রুয়ারির কাউন্সিল সভায় আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে।

বিমানবন্দরে দীর্ঘ ঘোরাফেরা করার পরে, বিকেল সাড়ে ৪ টায় নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ভারতীয় এয়ারলাইন্সের একটি বিমান রানওয়েতে স্পর্শ করেছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে  197৫ সালের ১৫ ই আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা তখন জার্মানিতে ছিলেন এবং এভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনাকে দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের কামনা করে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি দেশের উন্নয়নে ও সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশাল অবদান রেখেছেন।

তিনি দলীয় নেতাকর্মী এবং সমমনা সংগঠনসমূহের পাশাপাশি দেশের জনগণকে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালনের জন্য, উপাসনাস্থলে নামাজ আদায় করতে, মিছিল বের করে আলোচনা সভা করার আহবান জানান। দেশটি.

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (আ.লীগ) শুক্রবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ’রমনায় আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সভার উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা করবেন।

দেশে ফিরেই দারিদ্র্যক্লিষ্ট এই জাতিকে মুক্তি দিতে বিরতিহীন যাত্রা একজন শেখ হাসিনার। দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে সবার বাসোপযোগী করা প্রগতির স্বপ্ন বাস্তবায়নের সেই যাত্রা রাজনৈতিক-পারিপার্শ্বিক আর প্রাকৃতিক শত প্রতিকূলতাতেও হার মানাতে পারেনি দৃঢ়চেতা এই নেত্রীকে।

প্রত্যাবর্তনের চার দশকে ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে বরাবরই দেখা গেছে কল্যাণমুখী মানসিকতায় যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সব সামলে নেয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূমিকায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের জন্য সুকৌশলে তিনি যুদ্ধ করে চলেছেন প্রাকৃতিক আর মনুষ্যসৃষ্ট সব বাধা-বিপত্তির বিপরীতে। পিতৃহারা শেখ হাসিনা যখন ঢাকায় ফিরেছিলেন সে সময়টাতেও প্রকৃতি ছিলো এক রুদ্র মূর্তির বাতাবরণে। কালবৈশাখীর ঝড় সামলে চলার শুরু হয়তো সেই থেকেই।

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা চতুর্থ বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজও মুখোমুখি এক অদৃশ্য ঝড়ের। নানান সূচকে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিলো সত্যিকারের সোনার বাংলা হয়ে উঠতে, ঠিক তখনই বৈশ্বিক মহামারীর বাধা এসে হাজির। সংক্রমণ প্রবণ এক জীবাণুর (করোনা ভাইরাস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পুরো জাতি। এর মধ্যেও থেমে নেই এর করাল গ্রাস থেকে উত্তরণের চেষ্টা; যার নেতৃত্বও দিচ্ছেন সেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যখন দেশে ক্রমে বেড়েই চলেছে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। ঠিক এর শুরু থেকেই এ যুদ্ধের জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত করেছেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। সংক্রমণ রোধে অর্থনৈতিক স্থবিরতা নেমে আসবে জেনেও, দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে মানুষকে নিরাপদ করার প্রয়াসে নির্দেশ দেন ‘ঘরে থাকার’।

অর্থনীতি থেকে শুরু করে পরিবর্তিত সামাজিক বাস্তবতায় সবকিছু থমকে দেয়ার বৈশ্বিক এই দুর্যোগেও বিরতিহীন যিনি শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তিনি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। অচেনা এই দুর্যোগের ধাক্কা সামাল দিতে সমাজের সব শ্রেণির জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে প্রতিনিয়তই ‘কিছু না কিছু’ বন্দোবস্ত করে চলেছেন তিনি।

আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে যাঁর নেতৃত্বে, তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি ফিরে এসেছিলেন প্রিয় পিতৃভূমিতে বলেই তিনি অসহায় মানুষের ত্রাতা। তিনিই দিক-নির্দেশক, অর্থনৈতিক মুক্তির অগ্রযাত্রায় বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ভয়কে জয় করে সেদিন তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ এই করোনা সংকটেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক তিনি। তাকে ঘিরেই সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ।

আমাদের অভিবাদন গ্রহণ করুন প্রিয় নেত্রী- শেখ হাসিনা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।জয় শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।