ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শতবর্ষী খাতুন নেছার দিন কাটে ঝুপড়ি ঘরে

স্বামী মারা যাওয়ার শোক সইতে না পেরে একপ্রকার পাগলের মতো হয়ে যান খাতুন নেছা। একদিন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ১৪ বছর পর পাওয়া যায় তাকে। তারপর ওঠেন মেয়ের কাছে। মেয়ের সংসারে এমনিতেই অভাব-অনটন। তারপরও গর্ভধারিণী মাকে বাঁচাতে ভিক্ষা করে এনে খাওয়ান। আর যেদিন কিছু না জোটে, সেদিন থাকেন অনাহারে। একমাত্র ছেলেও মাকে ছেড়ে চলে যান বিদেশে। বার্ধক্যের কারণে এখন হাঁটতে পারেন না খাতুন নেছা। জায়গা হয়েছে একটি ঝুপড়ি ঘরে। বৃষ্টি এলে ঘরে পানি ঢুকে হয়ে যায় স্যাঁতসেঁতে। সরকারি কোনো সহযোগিতা পান না।

ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খাতুন নেছার বয়স ১০০ ছুঁইছুঁই। তার স্বামী আলী আহমেদ মারা যান ২৫ বছর আগে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে।জানা যায়, স্বামী মারা যাওয়ার পর যখন নিখোঁজ হন খাতুন নেছা। এদিকে তার ছেলে সব সম্পত্তি বিক্রি করে পাড়ি জমিয়েছেন পাকিস্তানে। মায়ের সঙ্গে রাখেন না কোনো যোগাযোগ। তাই যখন তাকে উদ্ধার করে আনা হয়, তখন একমাত্র মেয়ের কাছে হয় তার আশ্রয়। এদিকে ৭২ বছর বয়সী মেয়ে সাহার বানুর সংসারেও অভাব। তাই মাকে নিয়ে চলছে তারও নিদারুণ কষ্ট।

খাতুন নেছা এক বছর বয়স্ক ভাতা পেলেও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় এখন আর তা-ও পাচ্ছেন না। বার্ধক্যের কারণে হাতের আঙুলের রেখা অস্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই আঙুলের চাপ না দিতে পারায় করতে পারছেন না জাতীয় পরিচয়পত্র। আর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় মিলছে না ভাতা।

এলাকাবাসী জানান, খাতুন নেছা তার স্বামী মারা যাওয়ার পর পাগল হয়ে যান। তাকে ঘরে আটকে রাখা হতো। সুযোগ পেলেই ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যান। আবার ফিরে আসতেন। এর আগে দীর্ঘ ১৪ বছর নিখোঁজ ছিলেন। পরে পটুয়াখালীর রাঙাবালী থেকে সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে দিয়ে যান। তখন সরকারি একটি বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দিলেও এখন তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।